পাকিস্তানের বিদায়, এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কা
এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠল শ্রীলঙ্কা। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৫২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওভারে ২ উইকেট হাতে রেখেই জয় পায় শ্রীলঙ্কা। ২ উইকেটের জয় পেয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারায় বাবর আজমের দল। এরপর সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে গড়েন ১০৮ রানের জুটি। ৪০ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৭ রানে সাজঘরে ফেরেন ইফতিখার।
তবে রিজওয়ান খেলেন শেষ বল পর্যন্ত। ৭৩ বলে ৮৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল দুটি ছক্কা ও ছয়টি চার। এর আগে ওপেনিংয়ে নেমে ৬৯ বলে ৫২ রান করেন আব্দুল্লাহ শফিক।
সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক বাবর আজম। ৩৫ বলে ২৯ করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩ উইকেট শিকার করেছেন মাথিশা পাথিরানা। তবে ৮ ওভারে ৬৫ রান খরচ করেছেন তিনি। প্রমোদ মাদুশানও ছিলেন খরুচে, ৭ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ২টি উইকেট।
৪২ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ২৫২। বৃষ্টি আইনে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্যও ২৫২।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে লঙ্কান ব্যাটাররা। রান তাড়ায় নেমে মারমুখী শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। তাদের অবশ্য উইকেটও হারাতে হয় দ্রুতই। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে ৪ চারে ৮ বলে ১৭ রান করে কুশল পেরেরা হয়ে যান রান আউট, দলের রান তখন ২০। তারপর আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার সঙ্গী হন কুশল মেন্ডিস। দুজনের ৫৭ রানের জুটি ভাঙেন শাদাব খান। এ স্পিনারের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ৪৪ বলে ২৯ রান করে ফেরেন নিশাঙ্কা। তবে কুশল একপ্রান্ত আগলে থাকেন, তার সঙ্গী হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। তারা দুজন মিলে রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন। দুজনের জুটি যখন ঠিক একশ রানে পৌঁছায়, তখনই আউট হন সামারাবিক্রমা।
৪ চারে ৫১ বলে ৪৮ রান করে সামারাবিক্রমা স্টাম্পিং হন ইফতেখার আহমেদের বলে। এরপর চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন মেন্ডিস। কিন্তু এই ব্যাটার এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বারের মতো ‘নার্ভাস নাইন্টিজে’ আটকা পড়েন। ইফতেখারের বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের উপরের অংশে লাগে মেন্ডিসের, দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মোহাম্মদ হারিস। ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ বলে ৯১ রানে আউট হয়ে যান।
এরপর ৪ বলে ২ রান করে অধিনায়ক দাসুন শানাকা আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। খেলা পুরো জমিয়ে তোলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। শেষের আগের ওভারে টানা দুই বলে তিনি ফেরান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও দুনিথ ওয়েল্লালাগেকে।
শেষ ওভারে ৮ রান দরকার হয় শ্রীলঙ্কার, স্ট্রাইকে ছিলেন না সেট ব্যাটার আসালাঙ্কাও। প্রথম বলে এক রান নেওয়ার পর দ্বিতীয়টিতে কোনো রান আসেনি। তৃতীয় বলে ফের এক রান নেন আশালাঙ্কা, চলে যান নন স্ট্রাইক প্রান্তে। পরের বলে দৌড়ে তিনি স্ট্রাইক প্রান্তে চলে যান, রান আউট হতে হয় সঙ্গী প্রামোদ মাদুশানকে।
তখন পুরো দায়িত্বটাই এসে পড়ে আসালাঙ্কার কাঁধে। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য দরকার ছয় রান। জামান খানের করা পঞ্চম বল কিপার ও স্লিপের মাঝখান দিয়ে হয়ে যায় বাউন্ডারি। শেষ বলে দরকার দুই রান। প্যাডে আসা বল ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিতে দুই রান নেন আশালাঙ্কা। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো প্রেমাদাসা। চারিথ আসালাঙ্কা অপরাজিত ৪৯ রানে শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে পৌঁছে দেন। কুশল মেন্ডিস দ্বীপরাষ্ট্রের হয়ে অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংস খেলেন। ১১তম বারের মতো ফাইনালে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। ১৭ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা।