লিবিয়ায় আনোয়ারার চার যুবককে জিম্মি রেখে ৪০ লক্ষ টাকার মুক্তিপণ দাবি
আনোয়ারা প্রতিনিধি
Link Copied!
লিবিয়ায় মেডিকেল ভিসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে চার বাংলাদেশি যুবককে জিম্মি রেখে নির্যাতন করছেন দূর্বৃত্তরা। এসব নির্যাতনের ভিডিও পরিবার ও স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমনের কাছে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেন স্বজনেরা।
অপহরণকৃতরা হলেন, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ ওয়াসিম (২২), মোজাহের মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিন (১৮), আব্দুর রহিমের ছেলে জাবেদুর রহিম ঝিনুক (১৯), জেবল হোসেনের ছেলে নাঈম উদ্দিন (১৮)। তারা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে জহিরুল ইসলাম ১৮ লাখ টাকা নিয়ে ৪ যুবককে গত মাসের ১৯ তারিখ লিবিয়ার উদ্দ্যেশ্য পাঠান। দুবাই ও মিশর হয়ে ১৫ দিন পর তারা লিবিয়ায় পৌছায়। সেখানে তারা জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার মিজানুর রহমানের তত্বাবধানে ছিলেন। কিছুদিন পর মিজান তাদর মেডিকেল ভিসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিয়ে গিয়ে মিশরের একটি দালাল চক্রের হাতে বিক্রি করে দেন। এরপর পাসপোর্ট ও ভিসা ছিনিয়ে নেন। সেখানে তাদের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও স্বজনদের মুঠোফোনে পাঠান এবং প্রতিজন থেকে ১০ লাখ টাকা করে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
বোরহান উদ্দিনের বড় ভাই শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রতিদিন তাদের নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ পাঠাচ্ছে। আজ বুধবার ৩ টার মধ্যে প্রতিজনের জন্য ১ লাখ টাকা করে পাঠাতে বলেন। বাকি টাকা কয়েক দিনের মধ্যে পাঠাতে বলেন। না হলে একজন একজন করে হত্যা করবে বলেছে। আমরা খুবই অসহায় এতো টাকা কিভাবে জোগাড় করব।
কান্নাজড়িত কন্ঠে জাবেদুর রহিম ঝিনুকের পিতা আব্দুর রহিম বলেন, ধার দেনা ও স্বর্ণলংকার বিক্রি করে জহিরুল ইসলামকে সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে লিবিয়ায় পাঠিয়েছি। কিন্তু সেখানে আমার ছেলে এতবড় বিপদের সম্মুখীন হবে তা কিছুতেই কল্পনা করি নাই। প্রতিনিয়ত আমার ছেলে সহ চারজনকে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন করছে। আমরা তাদের উদ্ধারে সরকার ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের চার যুবককে লিবিয়ায় অপহরণের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।